নবকুমার:
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলায় আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম পূর্ণমন্ত্রী। তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক বস্ত্র ও পাট শিল্পের হারানো গৌরব ফেরাতে নিরলস ভাবে কাজে করে যাচ্ছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। তাতে গোলাম দস্তগীর গাজী সফল হয়েছেন। বস্ত্র ও পাট শিল্প হারানো গৌরব ফিরে পাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে গোলাম দস্তগীর গাজী গুরুত্বপূণ ভূমিকাও পালন করছেন। তার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রাচীন বাংলার রাজধানী ও মসলিনের শহর ঐতিহাসিক সোনারগাঁ ‘বিশ্ব কারুশিল্প শহর হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেটরস কাউন্সিল (ডাব্লিউসিসি) প্রাচীন বাংলার রাজধানী ও মসলিনের শহর ঐতিহাসিক সোনারগাঁকে ‘বিশ্ব কারুশিল্প শহর’ ঘোষণা করেছে। এই স্বীকৃতির জন্য গোলাম দস্তগীর গাজী চেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে । এর ফলে প্রথম বাংলাদেশের কোন স্থান ‘ওয়ার্ল্ড ক্রাফট সিটির মর্যাদা লাভ করেছে সোনারগাঁ । নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে এটা গোলাম দস্তগীর গাজীর বড় সফলতা । এই সফলতার মাধ্যমে তিনি সোনারগাঁ তথা নারায়ণগঞ্জবাসীর হৃদয়ে যুগ যুগ বেচে থাকবেন। নারায়ণগঞ্জ জেলায় মন্ত্রী যাবে মন্ত্রী আসবে কিন্তু এ রকম অর্জন কেউ এনে দিতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, জামদানি বয়নশিল্প বাংলাদেশের ঐতিহ্যের মৌলিক, উৎকৃষ্ট ও অন্যতম অংশ। অসাধারণ নকশায় সমৃদ্ধ জামদানি বস্তুত মসলিনেরই একটি প্রকার, যা নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ, রূপগঞ্জ ও সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের বয়নশিল্পীদের হাতে অনবদ্য শিল্পকর্মে রূপ নিয়েছে। ষষ্ঠদশ শতকে মুঘল শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকার নন্দিত মসলিন হয়ে ওঠে সৃজনসৌকর্যে উৎকৃষ্ট নকশাদার জামদানি। পারসিক মোটিফের সঙ্গে বাংলার নিসর্গের ফুল-ফলের নকশা সংযোজন করে বয়নশিল্পীরা জামদানিকে করে তোলেন অনিন্দ্যসুন্দর। ‘ওয়ার্ল্ড ক্রাফট সিটি’র স্বীকৃতি পাওয়ায় জামদানি শিল্পের পীঠস্থান হিসেবে সোনারগাঁর সুনাম ও কৃতিত্ব বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত হবে; ‘ক্রিয়েটিভ ট্যুরিজম’-এর দ্বার উন্মোচিত হবে; স্থানীয় উদ্ভাবনী শক্তি, মেধা ও অভিজ্ঞতার পরিধি বাড়বে; জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিজ্ঞতা ও কৌশল বিনিময়ের ক্ষেত্র তৈরি হবে; ভারতের মহাবলিপুরম (পাথর খোদাই) ও জয়পুর (গয়না), চিনের ফুশিন (অ্যাগেট), থাইল্যান্ডের সাখন নাখন (ইন্ডিগো ডাই), ডেনমার্কের বর্নহোম (সিরামিক), ইরানের কারপোরগান (মৃৎশিল্প) ও ইসফাহানসহ বিশ্বের বিভিন্ন ক্রাফট সিটির সঙ্গে সহযোগিতা, অংশীদারিত্ব ও বিনিময়ের অভিনব সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এ ছাড়া সোনারগাঁর পানাম নগরী বিশ্বের ধ্বংসপ্রায় ১০০ প্রাচীন নগরীর মধ্যে অন্যতম। এবার ডাব্লিউসিসির স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে জামদানিশিল্পের পীঠস্থান হিসেবে সোনারগাঁর সুনাম বাড়বে।